দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতারা কার আনুগত্যে থাকবেন তা নিয়ে বিভক্তিও সৃষ্টি হয়েছে। শীর্ষ নেত্রীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে একটি পক্ষ দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদেরই মূল্যায়ণ করছেন। অন্যদিকে তারেক রহমান সিন্ডিকেট এখন খালেদাপন্থিদের কোনঠাসা করে রেখেছেন। এমনকি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলকেও পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। তার জায়গায় দলের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলা হচ্ছে, তারেক রহমানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় তার নির্দেশনায় বাস্তবায়ন করছেন রিজভী।
বিএনপির সূত্র বলছে, বেগম জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে দলের দায়িত্বে থাকা তারেক রহমান প্রথম দিকে মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতেন। কিন্তু এখন অধিকাংশ সিদ্ধান্তই তিনি এককভাবে নেন। এ বিষয়ে তিনি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের চেয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে বেশি প্রধান্য দেন। দলে তারেক সিন্ডিকেটের নেতা বলে পরিচিতরাও কোন বিষয়ে মহাসচিবের সঙ্গে পরামর্শ না করে রুহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। এতে দলে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন ফখরুলসহ অনেক সিনিয়র নেতা।
সম্প্রতি দল থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপির কিছু নেতা দলে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কোণঠাসা করতে চাচ্ছেন। দলে আমার চেয়ে নিচের পদে থাকা রুহুল কবির রিজভীকে দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ায় আমি হতবাক ও অপমানিত বোধ করেছি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই জাতীয় কাউন্সিল করে দলকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতা। কিন্তু তারেক রহমান ও তার অনুসারীদের কাউন্সিলের বিষয়ে অনীহা রয়েছে। তাদের মতে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অনুস্থিতিতে কাউন্সিল হলে এর নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।
এই সুযোগে দীর্ঘদিন কাউন্সিল না হওয়ায় বিভিন্ন জেলার নেতারা নিজ ইচ্ছা মতো কমিটি বাণিজ্য করছে। কোন নেতার পেছনে কার হাত রয়েছে এসব ভেবে কেউ বাধাও দিতে পারছেন না। ফলে দিনকে দিন শৃঙ্খলার বাইরে চলয়ে যাচ্ছে দলটি।