নিউজ ডেস্কঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আলোচিত এ মামলায় বিচারিক আদালতে ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন এবং তিন আসামির ১৪ বছরের কারাদণ্ডের রায় হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, শুনানি শুরু হয়েছে। আদালতের আদেশে আগামী চার কর্মদিবস টানা শুনানি চলবে। রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষ শুনানি করবে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ মামলার শুনানি শেষ হবে এবং বিচারিক আদালতের রায় বহাল থাকবে।
বিচারিক আদালতে কোনো মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী রায় কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এটিই ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় একটি স্কুলে শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় মামলার পর ২০০১ সালের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সাক্ষ¨গ্রহণ শেষে ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এক রায়ে ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়।
এছাড়া এক আসামির যাবজ্জীবন এবং অন্য তিন আসামিকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন– ওয়াসিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এর মধ্যে ইউসুফ, জাহাঙ্গীর আলম, শফিকুর রহমান ও মুফতি আবদুল হাই পলাতক। বিশেষ ক্ষমতা আইনের এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ফায়ারিং স্কোয়াডে দণ্ড কার্যকরের রায় দেয় আদালত।
এছাড়া মেহেদি হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের পর ডেথ রেফারেন্সের নথি ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হলে মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হয়। কারাগারে থাকা আসামিরা আপিল করেন।
এ মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানকে আসামি করা হলেও অন্য একটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলায় তাকে বাদ দেওয়া হয়।